Thu, Oct 6th, 2011 2:09 pm BdST | Dial 2000 from your GP mobile for latest news |
আশ্বিনী পূর্ণিমার দিন এবং এর আগে ও পরের পাঁচদিন করে মোট ১১ দিন সময়কে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম ধরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৬ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে।
এ সময়ে ইলিশ ধরা ও বিক্রির পাশাপাশি সরবরাহ ও মজুদও নিষিদ্ধ থাকবে। এ আদেশ অমান্য করলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত করে অভিযুক্তদের এক মাস থেকে সর্বোচ্চ ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হবে।
তবে এর পরে প্রত্যেকবার অপরাধের জন্য দ্বিগুণ হারে কারাদণ্ড ভোগ এবং জরিমানা দিতে হবে অভিযুক্তদের।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস এ বিষয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "দেশে ইলিশের উৎপাদন বাড়িয়ে দেশীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।"
এর অংশ হিসেবে মৎস্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়লে দেশে ইলিশের উৎপাদন আরো অনেক বেশি বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা দেশের মানুষের আমিষের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এছাড়া দেশে ইলিশের চাহিদা পূরণ করেও প্রচুর ইলিশ রপ্তানি করা যাবে।
চলতি মৌসুমে তিন লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের বছর (গত জুন পর্যন্ত) ইলিশ আহরণ হয়েছে তিন লাখ ৪২ হাজার মেট্রিক টন।
এ বছর গত জুলাই থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১০০ কোটি টাকা মূল্যের ইলিশ রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছে। পুরো মৌসুম শেষে এ রপ্তানির পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকার এই সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান চালানো হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ র্যাব, পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও নৌ-বাহিনীও এজন্য সতর্ক থাকবে।
জাটকা সংরক্ষণ ও জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান এবং গবেষণা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জাহিদ হাবিব জানান, ইলিশের প্রধান ইলিশ প্রজনন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে উপকুলীয় সাত জেলার ২১ উপজেলার ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে।
এসব এলাকার প্রধান ইলিশ আহরণের স্থান হিসেবে চারটি পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার শাহেরখাল থেকে হাইতকান্দি, তজুমদ্দিন উপজেলার উত্তর তজুমদ্দিন থেকে পশ্চিম সৈয়দ আওলিয়া, কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলি এবং কুতুবদিয়া উপজেলার উত্তর কুতুবদিয়া থেকে গণ্ডামারা পর্যন্ত।
এ সময় উপকুলীয় জেলা ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং চাঁদপুর এলাকায় ইলিশ প্রজনন নিশ্চিত করতে নদী ও বাজারে ক্রমাগত অভিযান চালানো হবে।
এর আগে ১৯৮৫ সালে মৎস্য সংরক্ষণ ও সুরক্ষা আইন অনুযায়ী প্রত্যেক বছর ১৪ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হতো। কিন্তু চন্দ্রমাস অনুযায়ী প্রত্যেক বছর ওই সময়ে মধ্যে আশ্বিনী পূর্ণিমা পড়ে না। ফলে প্রধান প্রজনন মৌসুমে প্রচুর পরিমান ইলিশ আটক হতো। এতে ইলিশের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ব্যহত হতো।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় স¤প্রতি আইনটির ওই ধারা সংশোধনের উদ্যোগ নেয়।
এর খসড়া চূড়ান্ত করে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতও নিয়েছে। এ বছর ইলিশ রক্ষায় খসড়া আইনের আলোকেই ৬ থেকে ১৬ অক্টোবর ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment