রাজধানীর বারিধারায় ডিওএইচএসের পার্কে উল্টো পথে হাঁটার অভিযোগে এই চার কিশোরকে মারধর করেন অবসরপ্রাপ্ত তিন সেনা কর্মকর্তা ও এক সার্জেন্ট
ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর বারিধারায় ডিওএইচএসের পার্কে উল্টো পথে হাঁটার অভিযোগে এ-লেভেলপড়ুয়া চার কিশোরকে মারধর করেছেন অবসরপ্রাপ্ত তিন সেনা কর্মকর্তা ও এক সার্জেন্ট। তাদের চোর হিসেবে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টাও করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই চার কিশোরের অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, ডিওএইচএস পরিষদ গতকাল শুক্রবার বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৈঠক করে। কিন্তু অভিযুক্ত চারজনের দুজনই বৈঠকে আসেননি। এ ব্যাপারে অভিভাবকেরা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
জানতে চাইলে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা ওই ছেলেদের চড় মারার কথা স্বীকার করেন। তবে ওই ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
ঘটনার শিকার স্কলাস্টিকা স্কুল ও কলেজের ছাত্র মুশফিকুর রহমান জানায়, তারা বারিধারার ডিওএইচএসের ১ নম্বর সড়কের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সহপাঠী ফাহাদ হোসাইন, পৃথু আমিন ও তাসবীর ইসলাম কোচিং শেষ করে তার বাসায় আসে। তাদের বয়স ১৭ বছর। ফাহাদ ও পৃথুর বাসা উত্তরায়, তাসবীর বনানীতে থাকে।
মুশফিকুর জানায়, সন্ধ্যায় তারা সবাই ডিওএইচএসের ৫ নম্বর সড়কের পার্কে ঘুরতে যায়। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হোসেন তাদের কাছে উল্টো পথে হাঁটার কারণ জানতে চান। তারা নিয়ম না জানার বিষয়টি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। এর পরও জাকির হোসেন তাদের বকাঝকা করেন। কিছুক্ষণ পর ডিওএইচএসের প্রশাসনিক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুল আশরাফ ও অপর একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আসেন। তাঁরা তাদের হাত ও চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে পার্কের পাশে ব্যারাকে নিয়ে যান। সেখানে রশি দিয়ে তিনজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটান, কেউ কেউ চড়-থাপড়ও মারেন। খবর পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের তত্ত্বাবধায়ক অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবদুস ছালাম ৩০-৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে আসেন। তাঁদেরও কেউ কেউ চড়-থাপড় মারেন।
মুশফিকুর বলে, খবর পেয়ে তার মা মাসুদা রহমান ও এক প্রতিবেশী এলে সাবেক সেনা কর্মকর্তারা তাঁদেরও গালমন্দ করেন।
আরেক কিশোর তাসবীর বলে, ‘বাঁধা অবস্থা থেকে কোনোমতে ছুটে আমি মাকে ফোন করতে পকেট থেকে মুঠোফোন বের করি। এ সময় আজিজুল ও ছালাম লাঠি দিয়ে হাতে আঘাত করে মুঠোফোন কেড়ে নেন।’
ফাহাদ বলে, ‘মারধরের একপর্যায়ে আজিজুল নিরাপত্তাকর্মীদের বলেন, “মারতে মারতে ওদের মেরে ফ্যাল।” এটা শুনে আমরা ভয়ে কুঁকড়ে যাই। তখন আমার চোখের সামনে আমিনবাজারে ছয় ছাত্র মারা যাওয়ার ঘটনার ছবি ভাসছিল।’ সে আরও জানায়, এ ঘটনার ৩০ মিনিট পর পুলিশ আসে। তখন তাদের বিরুদ্ধে গ্লাস চুরি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবার মা-বাবা এলে তাঁরা চুপ হয়ে যান। একপর্যায়ে আজিজুল ছাড়া অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। পরে বাবা-মায়েরা তাদের বাসায় নিয়ে যান।
গতকাল সকাল সোয়া ১০টায় ওই ঘটনা নিয়ে ডিওএইচএসের পরিষদ কার্যালয়ে সালিস বৈঠক করেন পরিষদের কর্মকর্তারা। সেখানে ওই চার ছাত্র, তাদের অভিভাবক ছাড়াও পরিষদের সভাপতি, কর্মকর্তা, মারধরকারী সাবেক তিন কর্মকর্তার দুজন উপস্থিত ছিলেন। আবদুস ছালামও অনুপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই কিশোরেরা ও তাদের বাবা-মায়েরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরা মারধরকারী আজিজুল আশরাফ ও জাকির হোসেনকে দেখিয়ে পরিষদের কাছে তাঁদের শাস্তি দাবি করেন।
বৈঠকের পর পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) কাজী আশফাক আহমেদ বলেন, আজিজুল আশরাফকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অন্য দুজনের বৈঠকে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে চলে যান।
জানতে চাইলে জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মারধর করিনি, চেঁচামেচি শুনে সেখানে গিয়েছিলাম।’
ঘটনার বিষয়ে আজিজুল আশরাফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা আমার ভুল হয়েছে। আমি ক্ষমা চাইছি।’
বৈঠকের পর তাসবীরের বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা না করার জন্য পরিষদ অনুরোধ করেছিল। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা বৈঠকে বসেন। কিন্তু এ বৈঠকে তাঁরা সন্তুষ্ট হননি। কারণ সব দোষীর শাস্তি হয়নি। তাই এ ব্যাপারে তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন।
ওই চার কিশোরের অভিভাবকেরা অভিযোগ করেন, ডিওএইচএস পরিষদ গতকাল শুক্রবার বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৈঠক করে। কিন্তু অভিযুক্ত চারজনের দুজনই বৈঠকে আসেননি। এ ব্যাপারে অভিভাবকেরা আইনি ব্যবস্থা নেবেন।
জানতে চাইলে ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। সাবেক সেনা কর্মকর্তারা ওই ছেলেদের চড় মারার কথা স্বীকার করেন। তবে ওই ঘটনার বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি।
ঘটনার শিকার স্কলাস্টিকা স্কুল ও কলেজের ছাত্র মুশফিকুর রহমান জানায়, তারা বারিধারার ডিওএইচএসের ১ নম্বর সড়কের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার সহপাঠী ফাহাদ হোসাইন, পৃথু আমিন ও তাসবীর ইসলাম কোচিং শেষ করে তার বাসায় আসে। তাদের বয়স ১৭ বছর। ফাহাদ ও পৃথুর বাসা উত্তরায়, তাসবীর বনানীতে থাকে।
মুশফিকুর জানায়, সন্ধ্যায় তারা সবাই ডিওএইচএসের ৫ নম্বর সড়কের পার্কে ঘুরতে যায়। সেখানে অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির হোসেন তাদের কাছে উল্টো পথে হাঁটার কারণ জানতে চান। তারা নিয়ম না জানার বিষয়টি জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে। এর পরও জাকির হোসেন তাদের বকাঝকা করেন। কিছুক্ষণ পর ডিওএইচএসের প্রশাসনিক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজিজুল আশরাফ ও অপর একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা আসেন। তাঁরা তাদের হাত ও চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে পার্কের পাশে ব্যারাকে নিয়ে যান। সেখানে রশি দিয়ে তিনজনকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে লাঠি দিয়ে পেটান, কেউ কেউ চড়-থাপড়ও মারেন। খবর পেয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের তত্ত্বাবধায়ক অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট আবদুস ছালাম ৩০-৪০ জন নিরাপত্তাকর্মী নিয়ে আসেন। তাঁদেরও কেউ কেউ চড়-থাপড় মারেন।
মুশফিকুর বলে, খবর পেয়ে তার মা মাসুদা রহমান ও এক প্রতিবেশী এলে সাবেক সেনা কর্মকর্তারা তাঁদেরও গালমন্দ করেন।
আরেক কিশোর তাসবীর বলে, ‘বাঁধা অবস্থা থেকে কোনোমতে ছুটে আমি মাকে ফোন করতে পকেট থেকে মুঠোফোন বের করি। এ সময় আজিজুল ও ছালাম লাঠি দিয়ে হাতে আঘাত করে মুঠোফোন কেড়ে নেন।’
ফাহাদ বলে, ‘মারধরের একপর্যায়ে আজিজুল নিরাপত্তাকর্মীদের বলেন, “মারতে মারতে ওদের মেরে ফ্যাল।” এটা শুনে আমরা ভয়ে কুঁকড়ে যাই। তখন আমার চোখের সামনে আমিনবাজারে ছয় ছাত্র মারা যাওয়ার ঘটনার ছবি ভাসছিল।’ সে আরও জানায়, এ ঘটনার ৩০ মিনিট পর পুলিশ আসে। তখন তাদের বিরুদ্ধে গ্লাস চুরি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ এনে পুলিশে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সবার মা-বাবা এলে তাঁরা চুপ হয়ে যান। একপর্যায়ে আজিজুল ছাড়া অন্যরা ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। পরে বাবা-মায়েরা তাদের বাসায় নিয়ে যান।
গতকাল সকাল সোয়া ১০টায় ওই ঘটনা নিয়ে ডিওএইচএসের পরিষদ কার্যালয়ে সালিস বৈঠক করেন পরিষদের কর্মকর্তারা। সেখানে ওই চার ছাত্র, তাদের অভিভাবক ছাড়াও পরিষদের সভাপতি, কর্মকর্তা, মারধরকারী সাবেক তিন কর্মকর্তার দুজন উপস্থিত ছিলেন। আবদুস ছালামও অনুপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ওই কিশোরেরা ও তাদের বাবা-মায়েরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাঁরা মারধরকারী আজিজুল আশরাফ ও জাকির হোসেনকে দেখিয়ে পরিষদের কাছে তাঁদের শাস্তি দাবি করেন।
বৈঠকের পর পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) কাজী আশফাক আহমেদ বলেন, আজিজুল আশরাফকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের মধ্যে যাঁরা জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অন্য দুজনের বৈঠকে অনুপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তর না দিয়ে চলে যান।
জানতে চাইলে জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মারধর করিনি, চেঁচামেচি শুনে সেখানে গিয়েছিলাম।’
ঘটনার বিষয়ে আজিজুল আশরাফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা আমার ভুল হয়েছে। আমি ক্ষমা চাইছি।’
বৈঠকের পর তাসবীরের বাবা কামরুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা না করার জন্য পরিষদ অনুরোধ করেছিল। তাদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা বৈঠকে বসেন। কিন্তু এ বৈঠকে তাঁরা সন্তুষ্ট হননি। কারণ সব দোষীর শাস্তি হয়নি। তাই এ ব্যাপারে তাঁরা আইনের আশ্রয় নেবেন।
No comments:
Post a Comment